Custom Search

Tuesday, April 29, 2014

‘আমাকে জেলে দিন, না হলে আত্মহত্যা করবো’

'আমাকে জেলে দিন, তানা হলে আমি আত্মহত্যা করবো। আমি আর পারছি না। আমাকে কেউ দেখতে পারে না। স্ত্রী, সন্তান, ভাই বোন, পাড়া প্রতিবেশী সবাই আমাকে ঘৃণার চোখে দেখে। আমি সবার কাছে ভালো হতে চাই।'

কথাগুলো চারঘাট মডেল থানা পুলিশকে লক্ষ্য করে বলছিলেন চারঘাট উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের মৃত-মুনছুর রহমানের ছেলে হেরোইনসেবী বাবু মিয়া (৩০)। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে চারঘাট মডেল থানায় হাজির হয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলামের কাছে এ সব কথা বলছিলেন তিনি।

বাবু বলেন, বন্ধুর পাল্লায় পড়ে ৪ বছর আগে শখের বসে হেরোইন সেবন শুরু করি। ধীরে ধীরে হেরোইন আমাকে গ্রাস করে ফেলে। আমি অতি গরীব ঘরের সন্তান। প্রতিদিন হেরোইনের টাকা যোগাড় করা আমার পক্ষে ছিল খুবই কঠিন। তাই হেরোইনের টাকা যোগাড় করতে গিয়ে পরিবারের লোকজনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পরিবারের থালা বাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করে হেরোইন সেবন করতে থাকি। এতে করে আমার স্ত্রীর সঙ্গে প্রায় ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকে। কেউ আমাকে ভালো চোখে দেখে না। আমার দুটি সন্তান রয়েছে। এর মধ্যে একটি সন্তান পঞ্চম শ্রেণিতে লেখা পড়া করছে, অন্যটি ছোট। আমার দু'টি সন্তানের জন্য আমাকে ভালো হতে সুযোগ দিন। এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন হেরোইনসেবী বাবু।

পরে বিকেলে চারঘাট মডেল থানার উপপরিদর্শক নজরুল ইসলাম হেরোইনসেবী বাবুকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল সাবরিনের কাছে হাজির করলে হেরোইন সেবনের অপরাধে বাবুকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন তিনি।

এছাড়া হেরোইনের হাত থেকে বাঁচাতে একই দিন আপন ছোট ভাইকে পুলিশের হাতে তুলে দেন বড় ভাই। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চারঘাট মডেল থানা পুলিশের হাতে হেরোইনসেবী ছোট ভাই মাসরেফুলকে তুলে দেন বড় ভাই সোজা উল্লাহ। উপজেলার ধর্মহাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, উপজেলার ধর্মহাটা গ্রামের মাওলা বক্সের ছোট ছেলে মাসরেফুল ইসলাম দীর্ঘ দিন ধরে হেরোইন সেবন করে আসছিল। পরিবারের লোকজন তাকে কোনভাবেই এ পথ থেকে সরিয়ে আনতে পারছিলো না। অবশেষে মঙ্গলবার দুপুরে মাসরেফুল ইসলামকে ধরে এনে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এসময় থানা পুলিশ হেরোইনসেবী মাসরেফুল ইসলামকে ভ্রাম্যমাণ আদালাতে হাজির করলে ভ্রাম্যমাণ আদালাতের বিচারক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন হেরোইন সেবনের অপরাধে মাসুরেফুলকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন।

No comments: